রফতারি বাণিজ্যে যে কারণে ধস
প্রকাশিত: ৮ অক্টোবর ২০১৯
বিজবার্তা রিপোর্ট :
চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিক জুলাই-সেপ্টেম্বরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রফতানি আয় কম হয়েছে ১১ শতাংশ। গেল অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় যা ৩ শতাংশ কম। ৯৬৪ কোটি ৮০ লাখ ডলারের পণ্য রফতানি করেছে বাংলাদেশ।
হঠাত করেই রফতানিতে কেন এমন নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি? বিশ্লেষকদের ধারণা ইউরোপের দেশগুলোই বাংলাদেশের প্রধান রফতানি বাজার। সেখানে এক ধরনের অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। সে কারণে সে দেশগুলোর মানুষ খরচ কমিয়ে দিয়েছে। পোশাকসহ অন্যান্য জিনিস কম কিনছে। আর অন্যদিকে, স্থানীয় উতপাদন খরচ বেড়ে গেছে। কিন্তু পণ্যের দাম বাড়ায়নি বায়াররা। প্রতিযোগী দেশগুলো বাজার ধরে রাখতে তাদের মুদ্রার মান কমিয়েছে; বাংলাদেশ সেটা করিনি। মূলত এই দুটি কারণেই রফতানিতে ধস।
এই সংকট থেকে উত্তরণে নীতি সহায়তা চায় তৈরী পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারকদের সংগঠন, বিজিএমইএ। এক্ষেত্রে নগদ সহায়তার পরিমাণ বাড়ানোর দাবী তোলা হয়। বলা হয়, ভারত সরকার তাদের দেশের পণ্য রফতানির উপর ৪ শতাংশ নগদ সহায়তা দিচ্ছে; কিন্তু বাংলাদেশে তা নেই। তবে নগদ সহায়তা দেয়া নিয়ে ভিন্ন মত দিয়েছেন অনেক বিশ্লেষক। বলা হচ্ছে, নগদ সহায়তা দিয়ে রফতানি বাড়ানো সম্ভব নয়। এই মুহুর্তে ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমানো দরকার। যে কাজটি প্রতিযোগি দেশ চীন, ভারত ও ভিয়েতনাম প্রতিনিয়ত করছে। সাম্প্রতিক সময়ে চীন তাদের মুদ্রার মান কমিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ এখনও তা করেনি।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো, ইপিবি তথ্য বলছে, ভালো বার্তা দিয়ে অর্থবছর শুরু হলেও দ্বিতীয় মাস আগষ্টে এসেই ধাক্কা খায় রফতানি আয়। প্রথম মাস জুলাইয়ে গেল বছরের জুলাইয়ের চেয়ে রফতানি বেশি হয় সাড়ে ৮ শতাংশ। কিন্তু আগস্ট মাসে গেলবছরের আগস্ট মাসের চেয়ে সাড়ে ১১ শতাংশ আয় কম আসে। দুই মাসে অর্থাৎ জুলাই-আগস্ট সময়ে আয় কমে যায় প্রায় ১ শতাংশ। আর এই দুই মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় কমে ১২ দশমিক ৪০ শতাংশ।
সেপ্টেম্বরে পণ্য রফতানি থেকে বাংলাদেশ আয় করেছে ২৯১ কোটি ৫৮ লাখ ডলার। রফতানির এই পরিমাণ গেলবছর একই মাসের তুলনায় সাড়ে ৭ দশমিক ৩০ শতাংশ কম। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম প্রায় ৮ শতাংশ। গত বছর সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ৩১৪ কোটি ৫৬ লাখ ডলারের পণ্য রফতানি করেছিল। এবার সেপ্টেম্বরে ৩১৬ কোটি ২০ লাখ ডলারের পণ্য রফতানির লক্ষ্য ঠিক করেছিল বাংলাদেশ। আর চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) পণ্য রফতানি থেকে বাংলাদেশের আয় হয়েছে ৯৬৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার। এই আয়ের ৮৫ শতাংশই এসেছে তৈরি পোশাক থেকে। এর মধ্যে ৮০৫ কোটি ৭৫ লাখ ডলারের যোগান দিয়েছে তৈরি পোশাক খাত। এ খাতে গেল বছরের একই সময়ের চেয়ে আয় কমেছে ১ দশমিক ৬৪ শতাংশ। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ আয় কম হয়েছে এবার।